Sunday, January 13, 2013

আজমিরীগঞ্জের কাটা গাং নদীতে বাঁধ নির্মাণ করায় বোরো ফসলে অনিশ্চয়তা

আজমিরীগঞ্জ :

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমবাগের পাশের কাটা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করায় দুই উপজেলার এক হাজার ২০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও বিপাকে পড়েছেন বানিয়াচঙ্গ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রায় দুই হাজার কৃষক। চলতি বছরে বোরো ফসল ফলাতে পারবেন কি না এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পশ্চিমবাগ গ্রামের এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাটা গাং নামে পরিচিত নদীতে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে বাঁধ নির্মাণ করেছে। ফলে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার কয়েকটি হাওর ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ও নোয়াগড়ের কৃষকদের প্রায় এক হাজার ২০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বর্তমান ভরা বোরো মৌসুমেও কৃষকরা তাঁদের জমিতে চারা রোপণ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ওই নদীতে বাঁধ নির্মাণের ফলে উত্তরের হাওর এলাকার জমিগুলোতে অতিরিক্ত পানি জমে আছে। আর এ বাঁধ ভেঙে না দিলে জমির পানি নিষ্কাশন হবে না। ফলে জমিতে কোনো ধরনের কাজও করা যাবে না।
সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এ এলাকার কৃষকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা ও অনিশ্চয়তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানান, আজমিরীগঞ্জের স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নলিউর রহমান নলি, বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান, বানিয়াচঙ্গের মোতাক্কিন বিশ্বাসসহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা নিজেদের ধানের প্রজেক্টের জমিতে পানি সেচ দিতে কাটা গাং নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছেন। কিন্তু প্রচণ্ড দাপটের ভয়ে কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথাও বলতে সাহস পাচ্ছেন না। তাঁরা আরো জানান, অন্যান্য বছর পৌষ মাসের শুরুতেই তাঁরা জমিতে কাজ শুরু করতেন। এ বছর এখন পর্যন্ত ধান রোপণ দূরের কথা, ধানের জমিই তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ফলে রোপণে বিলম্ব হলে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে ধান কাটতে হবে। আর জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে প্রতি বছরই বর্ষার পানিতে পাকা ধান তলিয়ে যায়। ফলে চলতি বছরের বোরো ফসল নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই ভুক্তভোগী কৃষকরা অবিলম্বে ওই বাঁধ কেটে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হাকিম বলেন, 'নদীতে বাঁধ নির্মাণ বেআইনি কাজ। তবে সমস্যাটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সমাধান করা সহজ। এ বিষয়ে আমি যোগাযোগ করব। এর পরও যদি সমাধান না হয় তবে আইনানুগভাবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

No comments:

Post a Comment