আজমিরীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিমে একেবারে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম গুলো চির অবহেলিত। যোগাযোগ, স্যানিটেশন, শিক্ষা, চিকিৎসা সর্ব ক্ষেত্রে নানা সমস্যায় জর্জরিত গ্রাম গুলো। প্রায় ১০ হাজার লোক অধ্যুষিত গ্রাম গুলো হল আলীপুর,মাহতাবপুর,রসুলপুর, কামালপুর, রাহেলা, নিশ্চিন্তপুর ও গাজীপুর। যোগাযাগ: সরেজমিনের গ্রাম গুলো ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতের আইল বাদে কোন রাস্তা নেই চলা চলের জন্য। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় ক্ষেত কিংবা আইলের উপর দিয়ে। এই গ্রাম গুলোতে কোথাও এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা নেই। মাহতাবপুর গ্রামের চর্তুদিকে ফসলের ক্ষেত। কামালপুর বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার কামালপুর গ্রামে যাওয়ার সুষ্ট একটি রাস্তা নেই। উপজেলা সদর থেকে কামালপুর কিংবা আলী মাহতাবপুর আসা যাওয়া করতে প্রায় অর্তেক দিন চলে যায়। ডাইরিয়া কিংবা ডেলিভারী রোগিদের হাসপাতালে যেতে যেতেই প্রাণ উষ্ঠাগত হয়ে পরে। পলো কিংবা দরজার কাট দিয়ে রোগিদের নিতে হয় স্থানীয় হাসপাতালে। স্যানিটেশন: উল্লেখিত গ্রাম গুলোতে স্যানিটারী ল্যাট্রিন নেই বললেই চলে। খোলা কিংবা জুলন্ত পায়খানা ব্যবহার করা হয়। মাহতাবপুর গ্রামে খোলা পায়খানা সারা গ্রামেই চরিয়ে পরতে দেখা যায়। আবার পাশের পুকুর গুলোতে আসে নর্দমা। সেই পানিকেই ব্যবহার করতে দেখা যায়। ফসলহানী: প্রতি বছর উল্লেখিত গ্রাম গুলোর বোরো ফসল আগাম বন্যায় তলিয়ে যায়। বিশেষ করে মাহতাবপুর, আলীপুর, কামালপুর, নিশ্চিন্তপুর অবস্থা খুবই খারাপ। গত বছর মাহতাবপুর, আলীপুর, কামালপুর, নিশ্চিন্তপুর গ্রাম গুলোর অধিকাংশ ফসল আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। চিকিৎসা: গ্রাম গুলোতে কোন হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিক নেই। ৪/৫ কিলোমিটার দূরে কাকাইলছেওয়ে রয়েছে হাসপাতাল। ৮/১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ কমপ্লেক্স। অনুন্নত যোগাযোগের কারনে কোন মূমর্ষ রোগিদের পৌছানো যায় না ।শিক্ষা: আলীপুর, গাজীপুর, নিশ্চিন্তপুর গ্রামে কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এজন্য অনেক শিশু পড়াশুনা করেন না বলে জানান,গাজীপুর গ্রামের হারুন মিয়া (২৫)। আশেপাশে নেই কোথাও কোন উচ্চ বিদ্যালয়। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মফিল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাহতাবপুরের রাস্তা নির্মানের জন্য জনগণের সহযোগীতা পাওয়া যায়না। পাওয়া যায় না মাটি এবং জায়গা। স্যানিটারী ল্যাট্রিন বরাদ্দ দিলেও গ্রামবাসি ব্যবহার করেনা। আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিতোষ হাজরার সাথে এব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এলাকাবাসীর দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন,নিশ্চিন্তপুর গ্রামে প্রাইমারি স্কুল হবে। এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করেও সফল হতে পারছিনা। তিনি এও বলেছেন,সরকারিভাবে এলাকার জন্য যে বরাদ্দ আসে তার বাইরে কিছু করা সম্ভব হয়না। তবে এলাকাবাসীর বড় সমস্যা হাওরের আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষা করা। আমি এব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর্থিকভাবে এই গ্রাম গুলোর মানুষ সচ্ছল হলে জীবন যাত্রারমান অনেকটাই পরির্বতন হবে বলে মনে করি। এলাকার সংসদ সদস্য এড.আব্দুল মজিদ খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,কামালপুর বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূর কামালপুর গ্রামে যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা চলতি বছর বরাদ্দ দিয়েছি রাস্তা নির্মানের জন্য। কামালপুর ও মাহতাবপুর বাধ নির্মানের জন্য ১১টন গম দিয়েছি। তিনি আরও জানান, কামালপুরে আরও একটি প্রাইমারি স্কুল হবে। মাহতাবপুর ও রসুলপুর উন্নয়নের জন্য কাজ করা হবে। তবে বিচ্ছিন্ন এলাকা বলে কাংখিত উন্নয়ন হয়তো হবে না।
বাংলাদেশ সময়: 3:০০pm ঘণ্টা, অক্টোবর 29, 2012
সম্পাদনা: শিহাব আল মাহমুদ , নিউজ এডিটর
No comments:
Post a Comment