Monday, November 26, 2012

বিশেষ কলাম.................................এক মালালার জন্য কত কদর.ফিলিস্তিন জোড়ে শত মালালার কবর

জুনাইদ আলহাবিব

৯ অক্টোবর কে বা কারা পাকিস্তানি এক অল্পবয়সি তরুণি সব কন্যাশিশুর শিক্ষার অধিকার আদায়ের দাবিদার মালালাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেছে, আর তার দোষ চাপিয়েছে তালেবানদের উপর। আহত মালালাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর কোনো উন্নতি না দেখায় উচ্চ চিকিৎসার জন্য তাকে বৃটেনে পাঠানো হয়। সেখানে মালালার উচ্চ চিকিৎসা করানো হয়। মালালাকে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার দাবিতে সারা বিশ্ব ক্রমে জোরালো হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩০ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক মালালাকে এ পুরস্কারে মনোনয়ন দেয়ার জন্য তাদের সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য আহ্বান জানান। এ দাবিতে গণস্বক্ষর করে তারা। আর এ দিনটিকে মালালা দিবস আখ্যায়িত করেছে। এদিকে মালালা দিবস ঘোষণা করায় জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের মানুষের কাঝে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে মালালা ইইসুফজাই। এ তো মাত্র এক মালালার জন্য। তার জন্য এতকিছু!
কিন্তু বিশ্বের ফিলিস্তিনি মালালাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। বোমা মেরে সবকিছু তছনছ করে দেয়া হচ্ছে। অথচ, ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিন গাজায় ইসরায়েল কার্যত সামরিক শক্তির মহড়া দিয়ে ইরানকে সর্তক করেছে মাত্র। এ দেখি এক খেলা। মনে চাইল বোমা মেরে, রকেট ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করল, আর পড়ে বলল অমুক দেশকে সর্তক করার জন্য এমনটা করা হয়েছে। এখন কই গেল বিশ্ব বিবেক? নাকি এটাও বিশ্ব রাজনিতিবিদদের রাজনিতি! কই এ ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা বা দমানোর জন্য পর্যন্ত তো কেউ এর পক্ষে কথা বলতে রাজি নন। কথা বলে বিশ্বের কাছে দোষি হতে চান না ওরা। এজন্য কথা বলছে না। যদিও আরবলীগ তাদের পক্ষে হয়ে কিছু বলেন। তবুও তাদের মনে ভয় সঞ্চার করছে হরদম। 
বিশ্বের সন্ত্রাসকে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্বসমাজ গড়তে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে চায়। শুধু চাচ্ছেই না। একের পর এক মুসলমানদের উপর আক্রমণ করেই চলেছে। বর্তমান বিশ্বের ফিলিস্তিন ও আরাকান মুসলমানদের প্রতি নজর দিলেই এর বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়। আর সিরিয়ার কাহিনি তো কারো অজানা নেই। যারা সকালে উঠে সংবাদপত্রে চোখ রাখেন, তারা ভাল করেই জানেন। কিন্তু এরপরও বিশ্বের মোড়লরা আজ নিরব।
সারা বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ, নৈরাজ্যবাদ এবং উচ্ছৃংখলতার পরিস্থিতির সৃষ্টিকারিরা হল বর্তমান বিশ্বের ইহুদি-খৃস্টান, বৌদ্ধ এবং ইসলাম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারিরা। আমি দ্ব্যার্থকণ্ঠে বলতে পারি, ইসলাম এবং মুসলমান ছাড়া বর্তমান বিশ্বের বিধর্মীরাই সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যতা সৃষ্টিকারি। কিন্তু সৃষ্ট এত সমস্ত দোষ ইসলাম এবং মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দিয়ে বিশ্বের সমাজ থেকে সন্ত্রাসমুক্ত  করছে আর বুঝাতে চাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মুসলমানরা করছে, আর আমরা শুধু বিশ্ব শান্তির জন্য সন্ত্রাস মুলোৎপাটন করছি মাত্র। আমার জীবনের ২৫টি বছর কাটিয়েছি। এর মাঝে অনেক ইতিহাস পড়েছি। তাতে দেখেছি শুধু বিধর্মীরাই সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি অপতৎপরতা চালিয়েছে।
ফিলিস্তিনি ছোট ছোট কোমলমতি শিশুরা তাদের কাছে কি দোষ করেছে যে, তাদের উপর বোমা হামলা করে তাদের হত্যা করা হচ্ছে? তাদেরও তো সন্তান আছে? মায়া-মমতা কি তাদের হতে লোপ পেয়েছে নাকি?
যদি কোনো প্রতিরোধমুলক যুদ্ধে নামতে হয়, তাহলে কোনো শিশু অথবা নারীদের উপর আক্রমণ করা যাবে না বলে এ মর্মে নিষেধাজ্ঞা আছে ইসলামে। কিন্তু এরকম বিধি-বিধিান বা মন-মানসিকতা অন্য কোনো ধর্মেই নেই। এরা নির্দ্বিধায় মুসলমান শিশু-নারীদের হত্যা করছে। একটুও ভ্রক্ষেপ করছে না । বরং ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে বিশ্বে মুসলমান নিধন চালাচ্ছে। আর মুসলমানদের মাঝেও একটা মুনাফিকগোষ্ঠী আছে, যারা ওদের সাথে তাল মিলিয়ে মুসলমানদের দোষি সাব্যস্ত করে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বলে গালি দিয়ে একটুও চিন্তা করছে না যে, সেও একজন মুসলমান ঘরের মুসলমান। আসলেই কি ওরা মুসলমান! আমি সন্দিহান পুরোটাই যে, তারা মুসলমান কি না?
মুসলমানদের ইসলামের উপর কোনো আঘাত এলে তার প্রতিবাদটুকুও পর্যন্ত করতে পারে না, এমনি শুরু হয়ে যায় বিশ্বে হুলুস্থুল। এ কিসের হুলুস্থুল? ওরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং বলে, এটা জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। ইসলাম এবং মুসলমান ছাড়া অন্য কেউ মুসলমানদের উপর স্টিম রোলার চালায়, তখন ওরা বলে, তারা তো তাদের প্রাপ্য আদায় করছে মাত্র।
হায় বিশ্বের মোড়লরা এবং কতিপয় নামধারি সরকারি কাগজপত্রে মুসলমানরা! তোমাদের জন্য আফসোস হয়, পরকালে তোমরা মহান বিচারক আল্লাহ তা’য়ালার কাছে কী জবাব দেবে?


লেখক ও সাংবাদিক
জুনাইদ আলহাবিব
আজমিরীগঞ্জ,হবিগঞ্জ।
ই-মেইলঃ- junaidalhabibi@yahoo.com

No comments:

Post a Comment